বিদেশি মুদ্রা বিনিময় ও ক্রিপ্টোকারেন্সি, 31 মে-04 জুন 2021-এর পূর্বাভাস

প্রথমেই গত সপ্তাহের ঘটনাবলির পর্যালোচনা:

  • ইউরো/ইউএসডি. ডি1-এ এই জুটির চার্টের দিকে তাকালে, একটা কথা বলা যেতেই পারে, গত আট সপ্তাহ ধরে এই জুটি ছিল ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু, এই জুটিকে আরও নীচের টাইমফ্রেমে, অর্থাৎ এইচ4 বা এইচ1-এর দিকে লক্ষ করলেই দেখা যাবে যে, গত দু’সপ্তাহ ধরে এই জুটি “সাইডওয়ে”-তে থেকে 1.2125-1.2265 রেঞ্জে আটকে থেকেছে। বাজার খোলা থাকার পাঁচটা দিন শেষ হওয়ার পর এই চ্যানেলের পিভট পয়েন্টও ছিল 1.2194 লেভেলে। এর থেকে ভবিষ্যতের কোনও দিশা পাওয়া যা্ছে না।
    গত সপ্তাহের ম্যাক্রো পরিসংখ্যানও এমনই বিচিত্র যে, এই জুটি ঊর্ধ্বমুখী হবে না নিম্নমুখী হবে, তা বোঝা যাচ্ছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকার ভাতার জন্য আবেদনের সংখ্যা নাগাড়ে কমেই চলেছে। কিন্তু রিয়াল এস্টেট বাজারেও মুলতবি হয়ে থাকা বিক্রির সূচক পড়ছে। মূলধন পণ্যের (প্রতিরক্ষা ও বিমান বাদে) অর্ডার বেড়েছে। অন্যদিকে, টেকসই পণ্যের অর্ডার কমেছে। তার উপর আবার, ইউএস জিডিপি (প্রথম ত্রৈমাসিক)-এর বার্ষিক তথ্যাদি একই জায়গায় আছে। তাই বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পারছেন না, কী করবেন।
    গত বসন্তে, চিপ মানির বান বইয়ে দিয়েছিল ফেড। তখন তাদের নীতি পুরোপুরি বোঝা গিয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, অর্থনীতিকে সংকট থেকে উদ্ধার করা এবং সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানো। এরপর একটা বছর কেটে গেছে। মন্দা কেটে গেছে, শেয়ার বাজারের সূচকগুলো ব্যাঙের ছাতার মতো গজাচ্ছে, বেকারত্ব কমছে, মুদ্রাস্ফীতিও গতিশীল হচ্ছে। এর পরও ফেড বলে চলেছে, যে-লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল, তা এখনও পূরণ হয়নি; তাই, আর্থিক সঞ্জীবনী (কিউই) কর্মসূচিকে এখনই গুটিয়ে নিলে চলবে না। তাহলে, বিনিয়োগকারীদের কাছে যে অতিরিক্ত অর্থ পড়ে রয়েছে, সেটা দিয়ে তাঁরা কী করবেন?
    এমনই কিছু পুঁজি দিয়ে বহু দিন ধরে বিক্রি হতে থাকা কম দামের শেয়ার কেনা হয়েছে। যার ফল এসঅ্যান্ডপি500 ফের 4200-এর উপরে চলে গেছে, এবং ডাও জোন্স গেছে 3450-র উপরে। আরেক অংশ, মানে 485.3 বিলিয়ন ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে বিনা সুদে পড়ে রয়েছে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, কিউই কর্মসূচির জন্য এমন শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হচ্ছে না, বরং ইউরোপ সহ অন্যান্য দেশেও হচ্ছে। এর ফলে ডলার এবং ইউরোপ সহ অন্যান্য দেশের মুদ্রা এখন শুধু আমেরিকানদের হাতেই নয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতেও এমনিই পড়ে আছে। যা স্পষ্টতই ইউরো/ইউএসডি চার্টে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
  • জিবিপি/ইউএসডি.  পূর্ববর্তী জুটিতে যেসব কারণের প্রভাব পড়েছে, সে সবেরই প্রভাব জিবিপি/ইউএসডি-র গতির উপর পড়েছে। ইউরো ও মার্কিন ডলারের জুটির মতো, ব্রিটিশ মুদ্রা ও ডলারের জুটিও গত দু’সপ্তাহ ধরে সাইডওয়ে ট্রেন্ডে রয়েছে। এই জুটি 1.4075-1.4220 রেঞ্জের মধ্যে ওঠা-নামা করছে। অবশ্য পাউন্ডের উত্থান বেশ ভাল মতোই হয়েছে। যা কিন্তু ইউরোপীয় মুদ্রার ক্ষেত্রে হয়নি। ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ড সুদের হার যে-সময় বাড়ানো হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে, তার বহু আগেই বলতে গেলে পাউন্ডের দর বেড়ে গেল।
    27 মে. বৃহস্পতিবারে ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডের অন্যতম ম্যানেজার গার্সচ্যান ভ্লিগা ঘোষণা করেছেন যে, 2022-এর প্রথমার্ধে সুদের হার বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে তিনি অবশ্য এ-ও নির্দিষ্ট করে বলেছেন যে, শ্রম বাজার যে-সময় ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক আগেই যদি তা ঘুরে দাঁড়ায়, সুদের হার বাড়বে তবেই।
    21 জুন তারিখে কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ব্রিটিশ প্রাইম মিনিস্টার বরিস জনসনের বক্তব্য, কোভিড-19 নিয়ে সাম্প্রতিক যে-পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে, সে অনুযায়ী বলা যেতে পারে যে, বিধি-নিষেধ তোলার সিদ্ধান্তে কোনও রদবদল হবে না। তাঁর এই কথা শোনার পরেই বিনিয়োগকারীরা অধিক আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। এর ফলে এই জুটি 36 মাস আগের উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। পাঁচ দিনের লেনদেনের শেষে এই জুটি ছিল 1.4188-এ।
  • ইউএসডি/জেপিওয়াই. গত সপ্তাহের পূর্বাভাসে মাত্র 25 শতাংশ বিশেষজ্ঞ এই মত প্রকাশ করেছিলেন যে, এই জুটির মধ্যে ডলারের দর বাড়বে। কিন্তু, 10 বছরের ইউএস ট্রেজারি বন্ডে আয় 1.57% থেকে বেড়ে 1.62% হয়েছে বলে, দর ওঠা-পড়ার লড়াইয়ে ডলারের দর বেড়েছে। ইয়েন এমন এক মুদ্রা, যেখানে বিনিয়োগ করাকে নিরাপদ বলে মনে করা হয়। কিন্তু, 10 বছরের জাপানি বন্ডে আয় যখন মাত্র 0.25% হয়, তখন ইযেনের উপর উল্লিখিত পরিবর্তনের বেশ চাপ পড়ে বৈকি।
    তার উপর আবার এমন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে যে, জাপানি অর্থানীতি ঘুরে দাঁড়াতে কিছু সময় নেবে। এরও একটা চাপ পড়েছে ইয়েনের উপর। জাপানি অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কা দেখা দেওয়ার কারণ একটি খবর। এই খবরটা হল, আগামী তিন সপ্তাহের জন্য, অর্থাৎ 20 জুন পর্যন্ত টোকিয়ো ও অন্যান্য জায়গায় চলতে থাকা রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থাকে দেশের কর্তৃপক্ষ বাড়ানোর কথা ভাবছেন। এসব ছাড়াও ডলারের দর বাড়ার আরেকটা কারণ হল, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন 6 ট্রিলিয়ন ডলারের মার্কিন বাজেটের প্রস্তাব রেখেছে।
    এর ফলে, ইউএসডি/জেপিওয়াই জুটি 108.55-109.75 রেঞ্জকে পার করে উপরে উঠে গেছে, এবং পৌছেছে 110.20 পর্যন্ত উচ্চতায়। গত সপ্তাহ ধরে যতটা উঁচুতে ছিল, তারও উপরে চলে গেছে। তবে, সপ্তাহ শেষ হওয়ার সময় এই জুটি সেই উচ্চতা থেকে সামান্য নীচে নেমে 109.83-এ এসে থেমেছে।
  • ক্রিপ্টোকারেন্সি. 2014 ও 2018-তে ক্রিপ্টো বাজারে যে-শীতলতা লক্ষ করা গিয়েছিল, তার সঙ্গে এখনকার ক্রিপ্টো বাজারের অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। অবশ্য, বেশ কিছু পার্থক্যও দেখতে পাওয়া যাবে। তাই, এখনই জোর গলায় এটা বলা ঠিক হবে না যে, 2021-এও ক্রিপ্টো বাজার সেই শীতলতার দিকেই ঢুকে যাচ্ছে বলে চোখে পড়ছে; বরং, গত মাসকে বিলম্বিত হেমন্ত বলা যেতে পারে। যার পর শীত পার করে এই বাজার সোজা বসন্তের মরসুমে ঢুকে পড়বে।
    চিনে ভার্চুয়াল কারেন্সির মাইনিং ও ট্রেডিঙের বিরুদ্ধে যে লড়াই চলছে তার ফলে ক্রিপ্টো বাজার চাপে পড়ে গেছে। যেমন, ইনার মোঙ্গোলিয়া রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কমিশন যে নথি প্রকাশ করেছে, তার আটটা প্যারাগ্রাফ দেখলেই বোঝা যায়, এটা কেমন করে হচ্ছে। (ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজের মতে, বিটকয়েন গণনা করার ক্ষমতার দিক দিয়ে চিনের এই অঞ্চল তৃতীয় স্থানে আছে)।
    সে জন্য, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও ডেটা সেন্টারগুলোকে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে যে, তারা যেন বিদ্যুৎ শক্তির খরচ কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে, টেলি-যোগাযোগ কোম্পানিগুলোকেও মাইনারদের সঙ্গে কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে, তা না-করলে, তাদের লাইসেন্স প্রত্যাহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে। অবৈধ মাইনারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তাদেরও বিরুদ্ধে, যারা ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে আর্থিক প্রতারণার চেষ্টা করে এবং অবৈধ ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে। সেই সঙ্গে, ওই নথিতে এ-ও উল্লেখ করা হয়েছে যে, যদি কোনও ইন্টারনেট ক্যাফের টেরিটোরিতে মাইনিং হচ্ছে বলে জানা যায়, তাহলে সেই ক্যাফে বন্ধ করে দেওয়া হবে। যেসব কোম্পানি ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং সংক্রান্ত কাজে যুক্ত, যাদের সিনিয়র কর্মীদের নাম অবিশ্বস্ত ব্যক্তিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত যেতে পারে, এবং যাদের কর্মকর্তারা মাইনিঙে মদত দেয়, সেই সব কোম্পানির বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রয়টারের খবর, এমন কড়াকড়ি আইন হওয়ার পর, বিটিসি ডট টপ এবং হ্যাশকাউ-এর মতো বড়-বড় মাইনিং কোম্পানি চিন থেকে পাততাড়ি গোটাতে শুরু করেছে। হ্যাশকাউ তাদের বর্তমান কাজকর্ম এখনও বন্ধ করেনি, তবে নতুন ফার্ম কিনবে না বলে জানিয়েছে।
    বিটিসি ডট টপ অবশ্য ঘোষণা করেছে যে, পিআরসি-তে তারা কাজ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে।
    অন্যদিকে, আবার ভাল খবরও আছে। মে মাসে ক্রিপ্টো বাজার দু’বার মুখ থুবড়ে পড়েছিল ইলন মাস্কের জন্য। সেই তাঁকে ঘিরেই এই বাজার ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে। উত্তর আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাইনিং কোম্পানি তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল। সেই বৈঠকের আয়োজন করেছিল মাইক্রো স্ট্র্যাটেজির প্রধান মাইকেল সেলর। সেখানে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, বিটকয়েনের জন্য যে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হয়, তা হ্রাস করার জন্য বিটকয়েন মাইনিং কাউন্সিল গঠন করা হবে।
    কিন্তু এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন মার্শাল লং। উল্লেখ্য, বিটকয়েন মাইনিং যাঁরা শুরু করেছিলেন, লং তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর মতে, মাস্ক ভুলভাল কোম্পানির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন; কেননা, ওই কোম্পানিগুলো “হ্যাশরেটের খুবই ছোট্ট একটা নেটওয়ার্ক” পরিচালনা করে। লঙের মতে, বিলিয়নেয়ার মাস্ক যদি পরিস্থিতি বদলাতেই চান, তাহলে তাঁকে কয়েনমিন্টের সঙ্গে এবং অ-লাভজনক সংস্থা টেক্সাস ব্লকচেন অ্যাসোসিয়েশন-এর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কেননা, তারাই প্রায় 15 শতাংশ হ্যাশরেটকে পরিচালনা করে থাকে।
    সে যাই হোক না কেন, বিটকয়েন মাইনিং কাউন্সিল গঠন করা বলে যে-সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার ফলে ইতিবাচক ফল আসতে শুরু করেছে। ক্রিপ্টোগেকো সার্ভিসের মতে, ক্রিপ্টো বাজারের ক্যাপিটালাইজেশন প্রায় 14 শতাংশ বেড়েছে, এবং বিটকয়েনের বর্তমান যা অবস্থা, তার মধ্যেও এর দর প্রায় 12 শতাংশ বেড়েছে। 26 মে তারিখে বিটকয়েন/ইউএসডি জুটির লেনদেন ছিল 40.865 ডলারে। যা কিনা ওই সপ্তাহের সর্বোচ্চ দর। তবে এই জুটি 41,000 ডলারের রেখা পার করতে পারেনি। শুক্রবার বাজার শেষ হওয়ার দিন তা ফের 35,000 ডলারে গিয়ে পড়েছে।
    24 মে তারিখে ক্রিপ্টো ফিয়ার অ্যান্ড গ্রিড ইন্ডেক্স পড়ে গিয়ে মাত্র 10 পয়েন্টে পৌঁছেছে। যা 12 মাসে সবচেয়ে কম। এটা অবশ্য বাজারের “এক্সট্রিম ফিয়ার” অনুযায়ীই হয়েছে। সূচকে পতন হওয়ার পাশাপাশি অবশ্য এ-ও আশা করা হয় যে, বিশাল ডিসকাউন্টও বাড়তে পারে। কেননা, বিনিয়োগকারীরা নতুন করে কেনাকাটা করবেন বলে মনে হয়। এবারও ঠিক তা-ই হয়েছে। বিটকয়েনের দর নীচে পড়ে, ফের উপরে উঠেছে। 28 মে, শুক্রবারে সূচক প্রায় 21 পয়েন্টের “ফিয়ার” জোনে ছিল। তাই মূল ক্রিপ্টোকারেন্সির দর যে ফের উঠতে পারে, সেই সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি।
    ক্রিপ্টো বাজারের মোট ক্যাপিটালাইজেশন 12 মে তারিখে 2.560 ডলারে পৌঁছে শীর্ষে ছিল। কিন্তু তার পর ধস নামল। এই পর্যালোচনা লেখা পর্যন্ত, মানে 28 মে তারিখে এই বাজার 40 শতাংশেরও নীচে নেমে গিয়ে 1.529 ট্রিলিয়ন ডলারে গিয়ে পড়েছে। এই অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় 10 লক্ষ লিভারেজ্ড ট্রানজাকশন লিকুইডেট হয়েছে।
    মে মাসে বিটকয়েন ডমিন্যান্স ইন্ডেক্স-এর সর্বনিম্ন মান ছিল 39.22 শতাংশ। এখন এটা সামান্য উপরে, অর্থাৎ 43.11 শতাংশে আছে। এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে সম্ভাবনা আছে। কারণ, স্থায়ী অল্টকয়েনের বিক্রি কম হচ্ছে।

 

বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতামত একত্র করে, কারিগরি ও রৈখিক বিশ্লেষণের বিভিন্ন পদ্ধতির ভিত্তিতে করা পূর্বাভাসের ভিত্তিতে আসন্ন সপ্তাহের পূর্বাভাস হিসাবে আমরা নিম্নলিখিত কথাগুলো বলতে পারি:

  • ইউরো/ইউএসডি. গোল্ডম্যান স্যাক্স ও ডয়শে ব্যাঙ্ক মনে করে, বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে 2002-2007’এর পরিস্থিতির মিল আছে। সেই সময়, মার্কিন ডলারের সূচক নীচে নামছিল। তাদের বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগকারীরা এক সময় গিয়ে আরও আকর্ষণীয় আন্তর্জাতিক সম্পদ খুঁজতে শুরু করবেন। তখন ইউরো/ইউএসডি জুটির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরও শক্তিশালী হবে।
    কিন্তু মর্গ্যান স্ট্যানলির বিশেষজ্ঞদের মত সম্পূর্ণ উলটো। তাঁরা মনে করেন, বর্তমানে যা সব হচ্ছে, তার সঙ্গে 1980 ও 1990-এর সময়ের অবস্থার মিল রয়েছে। তখন চলতি আমানতে বিশাল ঘাটতি সত্ত্বেও ডলার শক্তিশালী ছিল। এখন জিডিপি-র তুলনায় এই ঘাটতি 2008-এর পর সবচেয়ে বেশি। এমনটা হওয়ার কারণ, কিউই কর্মসূচির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানির তুলনায় রফতানি খুব দ্রুত বাড়ছে। কিন্তু, ডিএক্সওয়াই ডলার ইন্ডেক্স বুল-এর মতে, ইউরোপীয় ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতির তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যে ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তার ফলে, মার্কিন ডলার ও অন্যান্য সম্পদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ জাগবে।
    এ ব্যাপারে 50 শতাংশ বিশ্লেষক একমত। তাঁরা আশা করছেন, স্বল্প মেয়াদে ডলার মজবুত হবে এবং ইউরো/ইউএসডি জুটি গিয়ে পড়বে 1.1985-1.2000 জোনে। নিকটতম সাপোর্ট হল 1.2130 ও 1.2060। 30 শতাংশ বিশেষজ্ঞের মতে, 1.2125-1.2265 চ্যানেলে সাইডওয়ে ট্রেন্ড অব্যাহত থাকবে। 20 শতাংশের অবশ্য এই মত যে, এই চ্যানেল উপরের সীমা পার করে উঠে যাবে, এবং এই জুটি উঠবে 1.2350 পর্যন্ত। যা এ বছরের সর্বোচ্চ সীমা হবে।
    উল্লেখ্য, সাপ্তাহিক পূর্বাভাসে 50 শতাংশ লোক বলেছিলেন যে, ডলার মজবুত হবে এবং ইউরো/ইউএসডি জুটির পতন হবে। কিন্তু, মধ্যবর্তী পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে এ কথা বলেছেন 70 শতাংশ লোক।
    এইচ4 নিয়ে অসিলেটরদের মধ্যে খুব ভিন্ন মত রয়েছে। ডি1 নিয়ে অবশ্য সবুজ সংকেত দেওয়া লোকেরই প্রাধান্য বেশি। 50 শতাংশ অসিলেটর এই সংকেত দিয়েছেন। অবশ্য, 25 শতাংশ লাল সংকেত দিয়েছেন এবং বাকি 25 শতাংশ দিয়েছেন নিরপেক্ষ ধূসর সংকেত। ডি1 নিয়ে বেশির ভাগ ট্রেন্ড ইন্ডিকেটররাই (75%) উত্থানের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
    আসন্ন সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য পাওয়া যেতে পারে। 31 মে, সোমবারে জার্মানির উপভোক্তা বাজার সংক্রান্ত তথ্যাদি প্রকাশ হতে পারে বলে মনে হচ্ছে আমাদের। তারপর দিনই, মানে মঙ্গলবারে ইউরোজোনের উপভোক্তা বাজারের পরিসংখ্যান পাওয়া যেতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রস্তুতকরণ ক্ষেত্রে আইএসএম-এর ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে 1 জুন তারিখে।
    2 জুন তারিখে প্রকাশিত হবে জার্মানিতে হওয়া খুচরো বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্যাদি। বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্ম সংস্থানের স্তর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিষেবা ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক কার্যকলাপের আইএসএম সূচক সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে 3 জুন, বৃহস্পতিবারে। ইউরোজোনে খুচরো বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য এবং মার্কিন কৃষি ক্ষেত্র (এনএফপি)-র বাইরে চিরাচরিত ভাবে কত নতুন চাকরি সৃষ্টি হল তার সংখ্যা জানা যাবে কাজের সপ্তাহের একেবারে শেষে। মানে 4 জুন তারিখে।

  • জিবিপি/ইউএসডি. সুদের হার বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন গার্চসন ভ্লিগা। তাঁর মন্তব্যকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছেন কয়েক জন বিশেষজ্ঞ (60%)। ভ্লিগার মন্তব্যের ভিত্তিতে এই বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, নিকট ভবিষ্যতে পাউন্ড ফের তার 36 মাস আগের উচ্চতায়, অর্থাৎ 1.4240-তে গিয়ে পৌঁছবে। এই পূর্বাভাসের পক্ষে বলতে গিয়ে তাঁরা এই কথাটা মনে করিয়ে দিয়েছেন: মে মাসের শুরুতেই ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ড জানিয়েছে যে, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর গতি বৃদ্ধির হার নিয়ে তারা যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, তার চেয়েও আরও দ্রুত গতিতে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে, এবং এ বছরের শেষের দিকেই এই অর্থনীতি সেই অবস্থায় গিয়ে পৌঁছবে, যে-অবস্থায় সংকট শুরু হওয়ার আগে ছিল।
    অন্যান্য বিশ্লেষক (40%) অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। তাঁদের মতে, এখনও সব কিছু অস্পষ্ট লাগছে। 2022-এর প্রথমার্ধ আসতে এখনও ঢের দেরি, ততদিনে অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে। তাঁদের মোদ্দা কথা, এখনই উৎফুল্ল হওয়ার কিছু হয়নি। আসলে তাঁরা বিদেশের বাজারের উপরও খেয়াল রাখছেন। তাই এই বিশেষজ্ঞদের মতে, ডলারের দর বাড়বে এবং জিবিপি/ইউএসডি জুটির পতন হবে। নিকটতম সাপোর্ট লেভেল হচ্ছে 1.4175, 1.4135 ও 1.4100। টারগেট হল 1.4000।
    টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটররা অবশ্য উত্থানের পক্ষেই আছেন। ডি1 সংক্রান্ত অসিলেটরদের মধ্যে তাঁরা 75 শতাংশ। মানে ট্রেন্ড ইন্ডিকেটরদের মধ্যে 95 শতাংশ। রৈখিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে 1.4240 রেজিস্ট্যান্সের দিকে ফের এই জুটি পড়তে-পড়তে 1.4000 সাপোর্টে গিয়ে নামবে।
    আসন্ন সপ্তাহে দু’টি বক্তৃতা দেবেন ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার প্রধান অ্যান্ড্রু বেইলি। একটি 1 জুনে এবং অপরটি 3 জুনে। তিনি সুদের হার বৃদ্ধি নিয়ে নতুন কোনও প্রতিশ্রুতি দেবেন বলে আশায় আছেন বিনিয়োগকারীরা। ইউকে-র মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন শোনার ব্যাপারেও আগ্রহ রয়েছে। সেটা বের হবে 3 জুন, বৃহস্পতিবারে।
  • জিবিপি/ইউএসডি. এই জুটি নিয়ে যে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তাকে গ্রিনপিস বলা যেতে পারে। এইচ4-এর 90 শতাংশ অসিলেটর ও 95 শতাংশ ট্রেন্ড ইন্ডিকেটর, সেই সঙ্গে ডি1-এর 75 শতাংশ অসিলেটর ও 95 শতাংশ ট্রেন্ড ইন্ডিকেটর সবুজ সংকেত দিয়েছেন। 60 শতাংশ বিশেষজ্ঞও উত্থানের কথা বলেছেন। নিকটতম রেজিস্ট্যান্স হল 110.00। প্রথম টার্গেট হল গত সপ্তাহের সর্বোচ্চ সীমা, অর্থাৎ 110.20, এবং দ্বিতীয় টার্গেট হল ফের 21 সপ্তাহ আগের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছনো। অর্থাৎ 110.95।
    40 শতাংশ বিশ্লেষক পতনের কথা বলেছেন। তাঁদের মনে হচ্ছে, এই জুটি 108.55-109.75 চ্যানেলে ফিরে যাবে। এই জুটি যদি তাদের নিম্নতর সীমাকে পার করে নীচে নামে, তাহলে পরবর্তী টার্গেট হবে 107.50।
  • ক্রিপ্টোকারেন্সি. - বিলিয়নেয়ার ও কার্লাইল গ্রুপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড রুবিনস্টাইনের মতে, বিটকয়েন পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রায় নেই। এই সম্পদের দাম অনেকটাই কমে গেলেও, এর নিজস্ব পরিকাঠামোয় এর চাহিদা বজায় থাকবে। এই কয়েনের দাম যদি বাড়তে থাকে, তাহলে যেসব দেশ ক্রিপ্টোকারেন্সির বিরোধিতা করছে, তাদেরই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলো বিটকয়েনকে গুরুত্ব দিতে শুরু করবে।
    রুবিনস্টাইনের মতে, “নতুন ধরনের যে সম্পত্তিগুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে উন্মাদনা বজায় থাকবে। এগুলো নিয়ে আগ্রহ খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে না। আমরা এখনই শ’-শ’ বিলিয়ন নিয়ে কথা বলতে শুরু করে দিয়েছি। যে-কয়েনটাকে আসলে ডিজিট্যাল পেমেন্টের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, সেটা এখন পুরো মাত্রার সম্পদ হয়ে উঠেছে।”
    গ্লাসনোড ডেটা এই ইঙ্গিত দিয়েছে যে, হোয়েলরা বিটকয়েনে দীর্ঘ মেয়াদি অবস্থান গড়ে তুলেছেন। সেই সঙ্গে, বিপুল সংখ্যক বিনিয়োগকারী ওটিসি বাজার থেকে বেরিয়েও গেছেন। এ সবই রুবিনস্টাইনের মন্তব্যকে সত্যি প্রমাণিত করছে। তাঁর কথা সত্যি হওয়া মানে, ক্রিপ্টোর বাজারে যে-ধস নেমেছিল, তারপর ফের ক্রিপ্টোকারেন্সি জমা করার আরেক পর্যায় দেখা যেতে পারে। এ রকম হলে বিটকয়েন এবং তার পর গোটা ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারই হু হু করে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে বেঁচে যাবে।
    পূর্বাভাস যাঁরা দেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই বেশ আশাবাদী। বিনিয়োগ কোম্পানি আর্ক ইনভেস্ট-এর জেনারেল ডাইরেক্টর ক্যাটি উড ফের নিজের পূর্বাভাসে অনড় থেকেছেন। তাঁর বিশ্বাস, যা-ই হোক না-কেন, বিটকয়েন 500,000 ডলারে গিয়ে পৌঁছবেই।
    উড জানিয়েছেন যে, সম্প্রতি এই বাজারে যে-সংশোধন হয়েছে, তার ফলে এই সম্ভাবনা বেড়ে গেছে, বিটকয়েন ফান্ডকে এসইসি (ইউএস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) অনুমোদন দিয়ে দেবে। মোদ্দা কথা, যে পণ্যের দাম কম, সেটা সবুজ সংকেত হয়তো পেতে পারে।
    সেই সঙ্গে ইলন মাস্কের সেই মন্তব্যের কথাও ক্যাটি উড উল্লেখ করেছেন, যে-মন্তব্যের জেরে ক্রিপ্টো বাজারে ধস নেমেছিল। উডের মতে, মাস্কের উপর হয়তো ব্ল্যাকরক-এর মতো শেয়ার-হোল্ডারদের চাপ ছিল যে, তিনি যেন বিটকয়েনের বাজার দর কমিয়ে দেন। অবশ্য আর্ক ইনভেস্টের প্রধান ক্যাটি উড এই আশা করছেন যে, মাস্ক ফের ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করতে শুরু করবেন। কয়েক জন বিশেষজ্ঞের মতে, ইথেরিয়ামের ভবিষ্যৎ আরও মসৃণ। এনওয়াইইউ বিজনেস স্কুলের প্রফেসর অশ্বথ দামোদরণের মতে, মুদ্রা বিনিময়ের বাজারে লেনদেনের জন্য বিটকয়েনের থেকে বেশি উপযুক্ত ইথেরিয়াম। এই বিশেষজ্ঞের মতে, ইথেরিয়ামের বাস্তুতন্ত্র অনেক বেশি নমনীয়। যার ফলে লেনদেনের ক্ষেত্রে একে নিয়ে কাজ করা সহজ, বিশেষ করে এমন এক পরিবেশে, যার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে গেছে।
    দামোদরণ এ-ও উল্লেখ করেছেন যে, মুদ্রা বিনিময়ের বাজারে লেনদেনের ক্ষেত্রে বিটকয়েনের তুলনায় অন্যান্য ছোট-ছোট সম্পদ অনেক ভাল। কেননা এগুলো দিয়ে লেনদেন অনেক তাড়াতাড়ি করা যায়। বিটকয়েন নেটওয়ার্কে এত ভিড় থাকে যে, সেটাকে ট্রান্সফার করতে অনেক সময় লেগে যায়। প্রচলিত মুদ্রার লেনদেনের নিরিখেও ওই সময়টা বেশি। তাই এই বিশেষজ্ঞ মনে করেন, বিনিয়োগের জন্য বিশ্বজনীন সম্পদ হিসাবে বিটকয়েন বেশি উপযুক্ত।
    এই পর্যালোচনার শেষে আরও কিছু পরিসংখ্যান দেওয়া হল। হ্যারিস পোল ও কুপনকেবিন যৌথ ভাবে একটা সমীক্ষা চালিয়েছিল। সেটার ফল বিচার করে জানা গেছে, আমেরিকার নাগরিকদের কাছে ইথেরিয়ামের তুলনায় ডোজকয়েন মিম ক্রিপ্টোকারেন্সি অনেক বেশি পরিচিত হয়ে উঠেছে। এটা হয়তো ইলন মাস্কের জন্যই হয়েছে।
    ওই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল 2000 প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকানদের উপর। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই (89%) অন্তত একবার ক্রিপ্টোকারেন্সির নাম শুনেছেন। তার মধ্যে 70 শতাংশ উত্তরদাতা বিটকয়েনের ব্যাপারে জানেন, প্রায় 29 শতাংশ জানেন ডোজকয়েনের নাম এবং 21 শতাংশ জানেন ইথেরিয়ামের কথা। ইউএসডি কয়েন স্টেবলকয়েনের কথাও 21 শতাংশ জানেন। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে 18 শতাংশ জানিয়েছেন যে, তাঁরা লাইটকয়েনের সঙ্গে পরিচিত। 10 শতাংশ শুনেছেন যে, স্টেলার বলে একটা ক্রিপ্টোকারেন্সি আছে।
    23 শতাংশ মনে করেন, ডিজিট্যাল অ্যাসেট হল রাতারাতি বড়লোক হওয়ার একটা স্কিম। তিনজন উত্তরদাতার মধ্যে একজন (31%) এই দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেছেন যে, ভবিষ্যতে টাকাপয়সা বলতে ক্রিপ্টোকারেন্সিই থাকবে।


নর্ড এফএক্স অ্যানালিটিক্যাল গ্রুপ

 

সতর্কীকরণ: এখানে যা বলা হয়েছে তা বিনিয়োগ সংক্রান্ত পরামর্শ নয় বা আর্থিক বাজারে কাজ-কর্মের কোনও পথ-নির্দেশ নয়। এসব কথার উদ্দেশ্য শুধু তথ্যের যোগান দেওয়া। আর্থিক বাজারে লেনদেন করাটা বেশ ঝুঁকির ব্যাপার এবং এখানে জমা করা পুরো টাকাই জলে চলে যেতে পারে।  

ফিরে যান ফিরে যান
এই ওয়েবসাইটটি কুকি ব্যবহার করে। আমাদের কুকি নীতিমালা সম্পর্কে আরও জানুন।