ইউরো/মার্কিন ডলার : 1:1 সমতা অর্জিত
- আমরা যে বিষয় নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে কথা বলে আসছি তা সত্যি হয়েছে : ইউরো/মার্কিন ডলার 1.0000-এ ধাক্কা দিয়েছে মঙ্গলবার, 12 জুলাই। স্থানীয় নিম্ন 0.9951-এ স্থায়ী ছিল বৃহস্পতিবার, 14 জুলাই। এই জোড়াটি শেষবার এত নিম্নে এসেছিল ডিসেম্বর, ২০২২-এ। মনে রাখতে হবে যে ডলার শুধু ইউরোর প্রেক্ষিতেই শক্তিশালী হয়নি, বরং এইসঙ্গে বিশ্বের অগ্রগণ্য কারেন্সিগুলির তুলনায়ও বেড়েছে। ডিএক্সওয়াই সূচকও রয়েছে 20-বছরের উচ্চতায়, 14 জুলাই গিয়েছিল 108.99 উচ্চতায়।
গ্রিনব্যাকের মিছিল বিঘ্নিত হয়েছিল সাম্প্রতিক মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি ডেটা দ্বারা। কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) জুনে পৌঁছেছিল 9.1%-এ, 8.8% পূর্বাভাস অতিক্রম করে। মনে রাখতে হবে যে এটা 110 বছরে মাত্র 12 বার পর্যবেক্ষিত হয়েছে, এবং শেষবার মুদ্রাস্ফীতি 9%-এর ওপর গিয়েছিল 1981 সালে। এই রেকর্ড (বলা চলে একটি অ্যান্টি-রেকর্ড) বাজারের প্রত্যাশা শক্তিশালী করেছিল মার্কিন সেন্ট্রাল ব্যাংক দ্বারা আর্থিক নীতি দৃঢ়করণের (কিউটি) গতি সম্পর্কে। আগে এটা ধারণা করা হয়েছিল যে 27 জুলাইয়ে এফওএমসি (ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি)-র পরবর্তী বৈঠকে হার বাড়তে পারে 50-75 বেসিস পয়েন্ট, এখন কথা চলছে যে ফেডারেল ফান্ডের খরচ হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে বৃদ্ধি পাবে 100 বেসিস পয়েন্ট। এরকম একটি পদক্ষেপের সম্ভাবনা হিসেব করেছে 82% বিশ্লেষক আর সিএমই গ্রুপ ফেডওয়াচ-এর মতে, আগামী দুটি বৈঠকে হার বাড়তে পারে মোট 175 বেসিস পয়েন্ট, যা হবে 75%।
আটলান্টা ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক (এফআরবি) প্রেসিডেন্ট রাফায়েল বস্টিক এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁর মতে, এবছরের শেষে মুদ্রাস্ফীতি আরও ওপরে উঠতে পারে, ফেডেক আরও নির্দিষ্ট করে কাজ করতে হবে। এই বিশেষজ্ঞের মতে, মার্কিন সেন্ট্রাল ব্যাংক যে কোনো মূল্যে মুদ্রাস্ফীতি থামাতে চায়, এর ফলে হার শেষ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে 4.00% (এই মুহূর্তে এটা হল 1.75%)-এ। এবং এটা করা হবে এমনকি দেশের অর্থনীতি গভীরতম মন্দায় পড়লেও।
ডলারের জন্য যা ভালো সেটা স্টক মার্কেজের জন্য খারাপ। দীর্ঘায়িত অর্থনৈতিক নিম্নাভিমুখ সম্পর্কে ভীতির ফলে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে দূরে থাকার গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। S&P500, ডো জোনস ও নাসডাক পড়েছে, যখন ডিএক্সওয়াই বেড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খুচরো বিক্রির উপাত্তা, যা শুক্রবার সন্ধ্যা, 15 জুলাই, প্রকাশিত হয়েছিল, এই দূরে যাওয়াকে শ্লথ করেছিল। পূর্ববর্তী রিডিং ছিল বিয়োগ 0.1% ও পূর্বাভাস 0.8%, এই অঙ্ক জুনে 1.0% পৌঁছেছিল, যা ইউরো/মার্কিন ডলারকে ঠেলেছিল ওপরে এবং জোড়াটি শেষ করেছিল 1.0082-এ।
এটা মনে রাখতে হবে যে ফেডের আর্থিক নীতির দৃঢ়করণ সমস্যা সৃষ্টি করেছে শুধু মার্কিন অর্থনীতির জন্য নয়, বরং এইসঙ্গে সমগ্র বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্যও। আন্তর্জাতিক রিজার্ভে মার্কিন ডলারের শেয়ার ছিল 59%, 2020 শেষ হওয়ার সময়, আর ফেব্রুয়ারি 2022-এ আন্তর্জাতিক নিষ্পত্তিতে এই শেয়ার দাঁড়িয়েছে 39%। তাই ডলার হল পৃথিবীতে মূল রিজার্ভ কারেন্সি এবং পেমেন্টের প্রধান উপায়, দুই-ই। এর দৃঢ়করণে, প্রাথমিকভাবে বোঝা বেড়েছে উদিত বাজার অর্থনীতিতে যা ইতিমধ্যে আইএমএফ থেক বিশাল ঋণ গ্রহণ করে ফেলেছে। ঋণ নিয়ে কী অবস্থা হতে পারে তা ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কায় দেখা গেছে, একই সমস্যা অপেক্ষা করছে এল সালভাদোর, তিউনিশিয়া, ইজিপ্ট, পাকিস্তান ও ঘানার জন্য।
রক্ষণাত্মক সম্পদ রূপে ডলারের জনপ্রিয়তার বৃদ্ধি জারি থাকবে একটি মন্দার মনোভাব সত্ত্বেও এবং এজন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের নীতির। এই মূল্যায়ন লেখার সময়, 15 জুন সন্ধ্যায়, এই পূর্বাভাস সমর্থন করেছে 60% বিশেষজ্ঞ। উত্তরে আরও সংশোধন আশা করেছে 30% আর 10% বিশ্লেষক প্রদান করেছে নিরপেক্ষ পূর্বাভাস। D1-এ অসিলেটর রিডিং দিয়েছে সম্পূর্ণভাব একটি দ্বিধাহীন সংকেত : পুরো 100%-এর রং লাল। এদের মধ্যে 85% ট্রেন্ড ইন্ডিকেটরদের মধ্যে, বাকি 15% গ্রহণ করেছে নিরপেক্ষ অবস্থান।
উরো/মার্কিন ডলার জোড়ার জন্য সবচেয়ে কাছাকাছি শক্তিশালী সমর্থন হল 1.0040-1.0050 অঞ্চল, এরপর আছে 1.0000 স্তর। এটা ভাঙার পর, বিয়ার টার্গেট করবে 14 জুলাইয়ের নিম্ন 0.9950-তে, এমনকি এর নীচে শক্তিশালী 2002 সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স জোনকে, 0.9900-0.9930। বুলের জন্য নিকটতম গুরুতর লক্ষ্য হল 1.0350-1.0450 অঞ্চলে ফিরে যাওয়া, তারপর রয়েছে 1.0450-1.0600 ও 1.0625-1.0770 অঞ্চল। 1.0350-এর পথে বেশ কয়েকটা স্তর আছে, যা এই জোড়াটি পতনের সময় খুব সহজেই ভেঙেছিল, সেজন্য এটা এখনও নির্ধারণ করা কঠিন যে এর মধ্যে কোনটি চলার সময় গুরুতর বাধা হয়ে উঠবে।
আগামী সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে, কোনো সন্দেহ নেই, বৃহস্পতিবার, 21 জুলাইয়ে ইসিবি বৈঠক। এটা প্রত্যাশিত যে এই রেগুলেটর সুদের হার বাড়াবে 0.0% থেকে 0.25%-এ। এরকম একটি পদক্ষেপ ইউরোকে সামান্য সমর্থন করতেপারে, যদিও এর আশা খুবই ক্ষীণ মনে হচ্ছে ফেডের হকিশ নীতির প্রেক্ষিতে। বৈঠকের পর ইসিবি ম্যানেজমেন্টের সাংবাদিক সম্মেলন ও বিবৃতির দিকে নজর রাখতেই হবে, যাতে এই রেগুলেটরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বাজারকে একটা ধারণা দেওয়ার ব্যাপারটা থাকা উচিত।
অন্যান্য ইভেন্টের মধ্যে রয়েছে মঙ্গলবার, 19 জুলাই ইউরোজোনের কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) ও ব্যাংক লেন্ডিং রিপোর্ট প্রকাশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বাজার ও ম্যানুফ্যাকচারিং ক্রিয়াকলাপের ডেটা প্রকাশ পাবে বৃহস্পতিবার, 21 জুলাই এবং জার্মানির ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রের পিএমআই (পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স) ভ্যালু জানা যাবে পরের দিন। এই সঙ্গে, আমরা আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি, সুদের হার সম্পর্কে পিওপল’স ব্যাংক অব চায়নার সিদ্ধান্তের দিকে নজর রাখতে যা জানা যাবে 20 জুলাই। এই সিদ্ধান্ত বিশেষভাবে আগ্রহের, কেননা 2022 সালে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে চীনের জিডিপি হ্রাস পেয়েছে 2.6%, যেখানে পূর্বাভাস ছিল 1.5% হ্রাসের, যা ইঙ্গিত করে যে চীনের অর্থনীতি যাচ্ছে মন্দার দিকে।
জিবিপি/মার্কিন ডলার: 1.2000-এর জন্য লড়াইয়ে পরাস্ত, কিন্তু এখনও সবকিছু শেষ হয়নি
- জিবিপি/মার্কিন ডলার জোড়া, ইউরো/মার্কিন ডলার জোড়ার মতো নয়, এখনও বহুবর্ষীয় রেকর্ড ভাঙেনি, কিন্তু ইতিমধ্যে তার কাছে চলে এসেছে। গত সপ্তাহে স্থানীয় নিম্ন স্থির ছিল 1.1759-এ, এবং পাঁচদিনের পর্বে শেষ সুর ছিল 1.1865-এ। নীচে দুটি গুরুতর লক্ষ্য : 1.1409, বিপর্যয় বিন্দু, 2020 মার্চে কোভিড-19 অতিমারি শুরুর কারণে যা হয়েছিল এবং ডিসেম্বর 1984-এর নিম্ন 1.0757। আমরা মনে করি পাউন্ড ও ডলারের 1:1 সমতা সম্পর্কে আলোচনা এখন বড্ড বেশি আগে হয়ে যাবে।
বুধবার, 13 জুলাইয়ে প্রকাশিত ম্যাক্রো ডেটা হয়ে উঠেছিল অপ্রত্যাশিতভাবে সবুজ। যুক্তরাজ্য জিডিপি (yoy) পূর্বাভাস ছিল 2.7% বাস্তবে হয়েছে 3.5%, আর জুন জিডিপি, পূর্ববর্তী মূল্য বিয়োগ 0.2% এবং 0.1%-এর পুর্বাভাস সহ, উঠেছিল 0.5%-এ। এই পজিটিভ সত্ত্বেও, দেশের অর্থনীতির ওপর চাপের উপাদনগুলি চলে যায়নি। এর মধ্যে সমস্যা রয়েছে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত এবং ব্রিটেন ও নর্দান আয়ারল্যান্ডের মাঝে শুল্ক মতান্তর। মুদ্রাস্ফীতি রয়েছে 40 বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে, এবং এটা সম্ভব যে নভেম্বরের মধ্যে এটা 11% অতিক্রম করবে, যা অর্থনীতিকে ঠেলছে গভীর মন্দার দিকে। আমাদের সরকারের সংকট যোগ করা উচিত যার কারণে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পত্যাগ করেছেন, এর পাশাপাশি রয়েছে ইউক্রেনে সশস্ত্র আক্রমণের জন্য রাশিয়ার ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা।
ব্যাংক অব ইংল্যান্ড কর্তাদের বিবৃতি সত্ত্বেও, তারা তৈরি আর্থিক নীতি দৃঢ়করণের দ্রুততর গতি মেনে নিতে, বাস্তবে এই রেগুলেটর কাজ করছে খুবই সতর্কভাবে যতটা বাজার আশা করেছিল তার তুলনায়। বর্তমান সুদের হার হল 1.25%, যা সংশ্লিষ্ট ফেড হার (1.75%)-এর তুলনায় নিম্নতর এবং পরবর্তী ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে 4 আগস্ট, 2022। এবং এটা জিবিপি/মার্কিন ডলার জোড়ার ওপর নিম্নাভিমুখী চাপ বাড়াবে।
এই মুহূর্তে, 50% বিশেষজ্ঞের বিশ্বাস যে ব্রিটিশ কারেন্সির জমি হারানো বজায় থাকবে, উলটোদিকে 25% আশা করছে ওপরের দিকে ঘুরবে, আর 25% গ্রহণ করেছে নিরপেক্ষ অবস্থান। D1-এ ইন্ডিকেটরদের রিডিং এরকম। D1-এ ট্রেন্ড ইন্ডিকেটরদের মধ্যে, শক্তির অনুপাত হল 100:0% লালের পক্ষে। অসিলেটরদের মধ্যে, বিয়ারের সুবিধা সামান্য কম : 90% ইঙ্গিত দেয় পতনের, বাকি 10% তাদের চোখ ঘুরিয়েছে উত্তরে।
নিকটতম সাপোর্ট রয়েছে 1.1800-এ, এরপর 14 জুলাইয়ের নিম্ন 1.1759। তার পর, 1.1650, 1.1535 ও মার্চ 2020-র নিম্ন 1.1400-1.1450 অঞ্চলে। বুলের পরবর্তী কাজ হল 1.1875-1.1915 অঞ্চলে ওঠা এবং তারপর 1.2000-এ যুদ্ধের জন্য নতুন ধাপ, যা তারা গত সপ্তাহে হেরেছিল। জয়ী হলে, জোড়াটি যে অঞ্চল ও স্তরে বাধার সম্মুখীন হবে তা হল 1.2100, 1.2160-1.2175, 1.2200-1.2235, 1.2300-1.2325 ও 1.2400-1.2430।
যুক্তরাজ্যের ম্যাক্রোইকোনমিক ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রে, আমরা আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি নজর রাখুন মঙ্গলবার, 19 জুলাইয়ে, যখন যুক্তরাজ্যের শ্রম বাজারের ডেটা আসবে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড প্রধান অ্যান্ড্রু বেইলির ভাষণ রয়েছে সেদিনই। কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই)-এর মূল্য জানা যাবে বুধবার, 20 জুলাই এবং ব্রিটিশ অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কে ডেটার সমগ্র প্যাকেজ হাতে আসবে শুক্রবার। এর মধ্যে থাকবে জুনের খুচরো বিক্রির ডেটার পাশাপাশি গোটা দেশে ব্যক্তিগত খণ্ড ও ব্যাবসায়িক ক্রিয়াকলাপের (পিএমআই) সামগ্রিক তথ্য।
মার্কিন ডলার/জেপিওয়াই: শান্তভাবের পর ঝড়
- পূর্ববর্তী মূল্যায়নকে আমরা বলেছিলাম ‘ঝড়ের আগে শান্ত’ কেননা মার্কিন ডলার/জেপিওয়াই এই প্রথম পাঁচ সপ্তাহে এর 24-বর্ষীয় উচ্চতা নবীকরণ করেনি এবং একটি শ্বাস নিয়েছিল। কিন্তু একটা ঝড়ের প্রতিশ্রুতি ছিল বলে, এটা অবশ্যই বেরিয়ে আসবে। একটি নতুন উচ্চ 139.38 রেকর্ড হয়েছিল 14 জুলাই, এবং জোড়াটি ট্রেডিং সেশন শেষ করেছে 138.50-এ।
ইয়েনের নতুন দুর্বলকরণের কারণ একই : মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের হকিশ আর্থিক নীতি ও ব্যাংক অব জাপানের (বিওজে) আপাত-ঘুঘু নীতির মাঝে ব্যবধান। এদিকে, জাপানি সেন্ট্রাল ব্যাংকের পরের বৈঠক হবে আগামী সপ্তাহে, বৃহস্পতিবার, 21 জুলাই, যেখানে খুব সম্ভবত আরও একবার সুদের হার থাকবে অপরিবর্তিত, নেতিবাচক স্তরে, বিয়োগ 0.1%।
যদি আমরা সাধারণত আলোচনা করি বুল ও বিয়ারের মাঝে লড়াই সম্পর্কে, তাহলে ইয়েনের ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত, লড়াই হল ... বিশ্লেষক ও বিওজে-র মাঝে। প্রথমোক্ত, অধিকাংশ সময়ের জন্য, অপেক্ষা করছে সেন্ট্রাল ব্যাংক অবশেষে এর নীতি পরিবর্তন করবে, এবং সুতরাং দৃঢ়ভাবে ভোট দেয় ইয়েনের সবলীকরণের পক্ষে। শেষোক্ত, দৃঢ়ভাবে নয়, নীতি অপরিবর্তিত রাখে, এবং মার্কিন ডলার/জেপিওয়াই জোড়া দৃঢ়ভাবে ওপরে যায়।
এবার, মাত্র 40% বিশেষজ্ঞ কথা বলেছে এই জোড়ার 142.00 উচ্চতায় চলন সম্পর্কে। বাকি 60% আশা করে বিপরীতে, নিম্নাভিমুখী প্রবণতার। D1-এ ইন্ডিকেটরদের মধ্যে এরকম কোনো অনৈক্য নেই : 100% ট্রেন্ড ইন্ডিকেটর ও অসিলেটর তাকিয়েছে উত্তরে, যদিও শেষোক্তদের 20% রয়েছে অতিরিক্ত ক্রীত অঞ্চলে। সাপোর্ট রয়েছে যে স্তর ও অঞ্চলে তা হল 137.65, 137.00, 136.60 135.50-135.70, 134.00, 133.50 ও 133.00। বুলের লক্ষ্য হল 140.00 ও 142.00। আর যদি জোড়াটির বৃদ্ধি হার সাম্প্রতিক মাসগুলির মতো একই থাকে, এটা সক্ষম হবে আগস্টের শেষদিক-সেপ্টেম্বরের প্রথমে 150.00 অঞ্চলে পৌঁছতে।
জাপানি সেন্ট্রাল ব্যাংকের বৈঠক এবং তারপর এর কর্তৃপক্ষের সাংবাদিক সম্মেলন বাদে, এই সপ্তাহে জাপানে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আশা করা হচ্ছে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি: বিয়ার দশার শেষের শুরু
- পূর্ববর্তী মূল্যায়নে নজর দেওয়া হয়েছিল একটি অনিয়মের দিকে যখন ডলার ও মার্কিন স্টক ইন্ডাইস - S&P500, ডো জোনস ও নাসডাক একই সময়ে বাড়ছিল। গত সপ্তাহে বিষয়গুলো এরকম ছিল : মার্কিন কারেন্সি বৃদ্ধি বজায় রেখেছিল এবং ইন্ডাইসগুলো পড়ে গিয়েছিল। বিটকয়েনের ক্রেডিটও মাথায় রাখতে হবে, ঝুঁকি থেকে বিনিয়োগকারীদের সরে যাওয়ার আরেকটি ঢেউ সত্ত্বেও এটি 20,000 ডলার স্তরে থাকতে সমর্থ হয়েছিল। এখন, কথা হল, এটা কতদিন থাকবে?
রকফেলার ইন্টারন্যাশনাল-এর সিইও, যিনি এর আগে মর্গ্যান স্ট্যানলির প্রধান স্ট্র্যাটেজিস্টের দায়িত্ব পালন করেছেন, রুচির শর্মা মনে করিয়ে দিয়েছেন যে কোনো বিয়ারিশ ট্রেন্ড সাধারণত এক বছর মতো টেকে স্টক মার্কেটে, এবং স্টক ইন্ডাইসগুলো পড়েছে 35%। এই মুহূর্তে, বাজার সংকুচিত হয়েছে মাত্র 20%। সেজন্য আমরা বিটকয়েন সহ ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে আরও পতন আশা করতে পারি পরবর্তী ছয় মাসে।
‘আমি এটা বলব না যে আমরা ইতিমধ্যেই নিম্নে পৌঁছেছি’, বলেছেন শর্মা, এরপর যোগ করেছেন যে বিটকয়েন বৃদ্ধিতে ফিরবে এবং নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে বিয়ার সাইকেল শেষ হওয়ার পর। এই ফিনান্সিয়ার মনে করিয়ে দিয়েছেন যে পরিস্থিতির সঙ্গে এই শতাব্দীর প্রথম দশকের আমাজনের সঙ্গে মিল রয়েছে, ডট-কম বাবল চলাকালীন, যখন রিটেলারদের শেয়ার মূল্য পড়ে গিয়েছিল 90%। যদিও, তারপর স্টক ফিরে এসেছিল, এবং পরের 20 বছরে পৌঁছেছে তার 300 গুণ বেশি বিন্দুতে।
আপনি যদি বিটিসি/মার্কিন ডলার চার্টের দিকে তাকান, এটা দেখা খুব সহজ যে এই ফ্ল্যাগশিপ কারেন্সি সম্প্রতি রাউন্ডে লেভেলে ওঠানামা করছিল। সেজন্য, বুল ও বিয়ার লড়েছিল 40,000 ডলারের জন্য 11 এপ্রিল থেকে 5 মে পর্যন্ত। 10 থেকে 10 জুন পর্যন্ত ফ্রন্টলাইন ছিল 30,000 ডলার। জুনের মাঝামাঝি থেকে লড়াই শুরু হয়েছে 20,000 ডলার অঞ্চলে। এই মুহূর্তে ব্লুমবার্গের সার্ভের 60% বিনিয়োগকারী জানিয়েছেন যে খুব সম্ভবত বিটকয়েনের আরেকটা পতন ঘটবে, এবার 10,000 ডলারে। বাকি 40% অপেক্ষা করছে রিকভারি হবে 30,000 ডলারে। সমীক্ষায় 950 জন অংশগ্রহণ করেছিল। সংস্থাগুলির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় রিটেল ইনভেস্টরদের মধ্যে দোলাচল বেশি। প্রতি চতুর্থজন ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ‘আবর্জনা’ (পেশাদার মার্কেট অংশগ্রহণকারীদের 18%) আখ্যা দিয়েছে।
সিএনবিসি-তে এক ইন্টারভিউতে গ্যালাক্সি ডিজিটাল সিইও মাইক নভোগ্রাটজ বলেছেন যে তিনি প্রথম ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য 13,000 ডলারে আসার সম্ভাবনায় বিশ্বাস করেন না। ‘একটা অনুভূতি চলছে যে আমরা এই পতনের 90% দেখে ফেলেছি। সমস্যা হল পরবর্তী বিকাশের দরকার আরও আস্থা এবং নতুন পুঁজি’, বলেছেন তিনি। নভোগ্রাটজের মতে, এই ডিজিটাল অ্যাসেটের সাইডওয়ে ট্রেন্ড টিকবে ততদিন যতদিন-না ফেডারেল রিজার্ভ বেস রেট বৃদ্ধি বন্ধ করে, যা ঘটতে মোটামুটি 18 মাস লাগবে।
ম্যাক্রোইকোনমিস্ট বিশেষজ্ঞ লিন অ্যালডেন একই যুক্তি দিয়েছেন। এই ভদ্রমহিলার বিশ্বাস যে ক্রিপ্টো মার্কেটে কোনো স্পষ্ট বুলিশ সংকেত না থাকলেও, বৈশ্বিক ক্যাপিটুলেশনের জন্য সময় ইতিমধ্যে অতিক্রান্ত। তাঁর মতে, বিয়ারিশ প্রবণতার সবচেয়ে খারাপ অংশটা শেষ হয়েছে 2022-এর স্থিতিহীন প্রথমার্ধের সঙ্গে। এই ম্যাক্রো স্ট্র্যাটেজিস্ট বিশ্বাস করেন যে বিটকয়েন রিকভার করতে পারে যদি বিশাল বিটিসি সেল-অফ বন্ধ হয়।
যদিও অ্যালডেন সতর্ক করেছেন যে বিটকয়েন এখনও আরেক ধাপ পড়তে পারে। ‘ম্যাক্রোইকোনমিক্যালি, এই মুহূর্তে খুব বেশি বুলিশ অনুঘটক নেই, এবং আমি মূল্যের আরও পতনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছি না।’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘আমরা সেটা দেখেছি, অধিকাংশ সময়ের জন্য, বিটকয়েন খুবই দৃঢ়ভাবে অর্থ জোগানের সঙ্গ সম্পর্কিত, বিশেষ করে ডলারের সঙ্গে। সেজন্য, যখন আমরা গোটা বিশ্বে অর্থ জোগানের ক্ষেত্রে বিরাট বৃদ্ধি দেখেছি গত কয়েক বছরে, বিটকয়েনও তখন ভালো করেছে।’ এখন এর উলটোটা ঘটছে কেননা মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক চেষ্টা করছে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের। এটা, সেই অনুযায়ী, ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যে প্রভাব ফেলে। অন্য কথায় বলতে গেল, এখন সস্তা তারল্যের প্রবাহ শুকিয়েছে এবং সুদের হার বাড়ছে, বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে না-জড়ানোই ভালো মনে করেছে।
ক্রিপ্টো বাজারে যা ঘটছে তাকে কিছু বিশেষজ্ঞ বিপর্যয় হিসেবে মানতে নারাজ, তাদের মতে বরং এটা মাত্র আরেকটা গভীর সংশোধন। এই সঙ্গে, ঐতিহাসিক তথ্য উল্লেখ করে, তারা একটি বিয়ার মার্কেটের চূড়ান্ত দশায় প্রবেশ ঘোষণা করেছে। তাহলে, 2018-র শেষে, পূর্ববর্তী ঐতিহাসিক সর্বাধিক থেকে মোট পতন ঘটেছিল 84%। বিটিসি/মার্কিন ডলার জোড়া বর্তমানে মাত্র 71% পড়ছে 11 নভেম্বর, 2021-এর উচ্চ থেকে। সেজন্য, যদি আমরা এই মডেল অনুসরণ করি, আমরা সংশোধনের সমাপ্তি আশা করতে পারি 10,000-11,000 ডলার অঞ্চলে, এবং পরবর্তী জমাটবদ্ধকরণ হয়তো ঘটবে এক বছর বা তারও পর।
গ্লাসনোড-এর মতে, বাজার সংকোচন ভার্চুয়ালি এই খেলার বাকি ‘মার্কেট টুরিস্ট’দের দূর করেছিল, শুধু ধারকদের ছেড়েছিল ‘সামনের সারিতে’। গড়ে, তাদের প্রত্যেকের উপলব্ধিহীন ক্ষতি এখন 33%। এটা শুধু ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ ইন্ডিকেটরই নয়, এটা এইসঙ্গে বলে যে চূড়ান্ত বিয়ারিশ দশা মাত্র শুরু হয়েছে।
চূড়ান্ত দশার শুরু এইসঙ্গে সংকেত দিয়েছে মাইনারদের ক্যাপিটুলেশনও, যার সঙ্গে বিটকয়েনের নিম্নগামিতার শক্তিশালী আন্তঃসমন্বয় রয়েছে। অধিকাংশ পাবলিক মাইনিং সংস্থা তাদের উৎপাদন সম্প্রসারিত করত ঋণ সহকারে। এখন তাদের আয় কমেছে 50%, এটা তাদের বাধ্য করেছে নিজের কয়েন হোল্ডিং বিক্রি করতে যাতে অপারেটিং ও ঋণ করার খরচ কমানো যায়। গ্লাসনোড হিসেব করেছে যে মাইনার ইনভেন্টরির কাছে এখন রয়েছে 70,000 বিটিসি যার মূল্য হবে প্রায় 1.3 মিলিয়ন ডলার। এবং একটি প্রলম্বিত জমাটবদ্ধকরণের ঘটনায়, এগুলি বিক্রি করতে তাদের বাধ্য করবে, যা বাজারে অতিরিক্ত চাপ দেবে।
অনুগ্রহ করে মনে রাখুন যে এক্ষেত্রে, আমরা কথা বলছি একমাত্র শুরু সম্পর্কে, বিয়ারিশ ট্রেন্ডের চূড়ান্ত দশা শেষ হওয়া সম্পর্কে নয়। যেমন, 2018-19 সালে মাইনারদের আত্মসমপণ টিকেছিল চার মাস, যেখানে বর্তমান দশা টিকে আছে এক মাসের সামান্য বেশি সময়।
ইথেরিয়ামের ক্ষেত্রে, ইথেরিয়াম/মার্কিন ডলার জোড়ার ডায়নামিক্স কোট করে বিটিসি/মার্কিন ডলারের ডায়নামিক্সের পুনরাবৃত্তি। কিছু বিশেষজ্ঞ এর 1,280 ডলারে স্বল্পস্থায়ী উত্তরণের বিষয়টা উড়িয়ে দেয়নি, যদিও, তাদের বিশ্বাস যে এটা হবে বুলের জন্য আরেকটা ফাঁদ। এবং এর ট্রিগারিঙের পর জোড়াটি ফিরবে 1,000 ডলার অঞ্চলে। বিয়ারের পরের লক্ষ্য হল 500 ডলার।
ব্লুমবার্গ সার্ভেয় ফিরলে, সার্ভেয় অংশগ্রহণকারী 950 বিনিয়োগকারীর অধিকাংশই পরবর্তী পাঁচ বছরে বিটকয়েন ও ইথেরিয়ামের শক্তিশালী অবস্থানে আস্থা প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, ক্রিপ্টো মার্কেটের উন্নয়ন রেগুলেটরকে উৎসাহ জোগাবে এই ইন্ডাস্ট্রিকে নিরীক্ষণ করতে। এতে আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং ডিজিটাল অ্যাসেট ফের জনপ্রিয় হবে। রকফেলার ইন্টারন্যাশনাল-এর রুচির শর্মাও মনে করেন যে তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলো আরও বেশি থিতু হবে, যা তাদের মার্কিন ডলারকে গুরুতর ঠেলা দিতে অনুমোদন দেবে।
এই লেখার সময় (শুক্রবার সন্ধ্যা, 15 জুলাই), বিটকয়েন ট্রেডিং হচ্ছে 20,900 ডলারে। ক্রিপ্টোমার্কেটের মোট ক্যাপিটালাইজেশন হল 0.945 ট্রিলিয়ন ডলার (এক সপ্তাহ আগে ছিল 0.966 ট্রিলিয়ন ডলার)। ক্রিপ্টো ফিয়ার অ্যান্ড গ্রিড ইনডেক্স 5 পয়েন্ট পড়েছে গোটা সপ্তাহে, 20 থেকে 15 পয়েন্টে এবং এটি এখনও রয়েছে এক্সট্রিম ফিয়ার জোনে।
নর্ডএফএক্স অ্যানালিটিক্যাল গ্রুপ
বিজ্ঞপ্তি : এসব তথ্য আর্থিক বাজারে কাজের জন্য বিনিয়োগ বা পরামর্শ হিসেবে কোনো সুপারিশ নয় এবং এগুলি একমাত্র তথ্যমূলক উদ্দেশ্যের জন্য। আর্থিক বাজারে ট্রেডিং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর ফলে ডিপোজিটকৃত ফান্ডের পরিপূর্ণ ক্ষতি হতে পারে।
ফিরে যান ফিরে যান